প্রকাশিত:
৭ ডিসেম্বর, ২০২৫

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টায় হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করে এভাবেই নিজেদের দুর্দশার কথা বর্ণনা করেন তিনি।
ইউক্রেনের ড্রোন হামলার শিকার জাহাজটির চতুর্থ প্রকৌশলী এই বাংলাদেশি। তাঁর বাড়ি নরসিংদীতে। মাহফুজ ছাড়াও জাহাজটিতে আছেন চীনের সাতজন, ইন্দোনেশিয়া ও মিয়ানমারের একজন করে নাবিক।
তুরস্কের উপকূলের কাছে কৃষ্ণসাগর অতিক্রম করার সময় গেলো ২৮ নভেম্বর ‘এমটি কায়কাউস’ নামে তেলের ট্যাঙ্কারটিতে ড্রোন দিয়ে হামলা করে ইউক্রেনের নৌবাহিনী। এই জাহাজের ২৫ নাবিকের মধ্যে চারজন ছিলেন বাংলাদেশি। জ্বালানি তেলবাহী জাহাজটি রাশিয়ার ‘ছায়া নৌবহরের’ অংশ হয়ে কৃষ্ণসাগর পাড়ি দিচ্ছিল। তখন আগুন ধরে যাওয়া সেই জাহাজ থেকে সব নাবিককে নিরাপদে তুরস্কে নিয়ে যায় সেখানকার কোস্টগার্ড। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজটি ভেসে ভেসে বুলগেরিয়া সীমান্তে চলে যাওয়ায় মাহফুজসহ ১০ নাবিককে এটি আবার তুরস্কের সীমান্তে আনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
নাবিকদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ড্রোন হামলার পর সব নাবিককে উদ্ধার করে তুরস্কের একটি হোটেলে রাখে সে দেশের কোস্টগার্ড। জাহাজটিতে মাহফুজুলসহ মোট চারজন বাংলাদেশি ছিলেন। তাদের মধ্যে তিনজন দেশের উদ্দেশে তুরস্ক থেকে রওনা হয়েছেন।
তারা হলেন- চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার আজগর হোসাইন, কুষ্টিয়ার আল আমিন ও ঢাকার ধামরাইয়ের হাবিবুর রহমান।
‘মাহফুজসহ যারা আটকা পড়েছেন, তাদের বুলগেরিয়া বা তুরস্কের কোস্টগার্ড উদ্ধার করবে বলে আমাদের বিশ্বাস। আমরা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে তাদের সাথে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছি।’
উদ্ধারের দু্দিন পর কিছু নাবিককে নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে তুরস্ক। বুলগেরিয়ার কাছে থাকা ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজটি ফের তুরস্কের তীরে আনার এই নির্দেশ পালন করতে গিয়ে নতুন করে বিপদে পড়েছেন মাহফুজসহ ১০ জন। ড্রোন হামলায় জাহাজটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ায় সেটি নোঙর করতে পারছেন না তারা।
হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করে মাহফুজুল ইসলাম বলেন, হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজটি ভাসতে ভাসতে বুলগেরিয়ার সীমান্তে চলে যায়। সেখান থেকে এটিকে আবার তুরস্কের তীরে আনতে আমাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। উদ্ধার হওয়ার দুদিন পর আমরা নতুন এই কাজের দায়িত্ব পাই। তাই আমি দেশে ফিরতে পারিনি। আমরা ১০ জন তুরস্কের কোস্টগার্ডের সহায়তায় ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজটি তুরস্কের উপকূলে নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু ইঞ্জিন বিকল থাকায় এটি আর নোঙর করতে পারছি না। ভেসে ভেসে আবার বুলগেরিয়ার কাছে চলে এসেছে। আছি জীবনের ঝুঁকিতে। আশা করছি, বুলগেরিয়া বা তুরস্কের কোস্টগার্ড আমাদের ফের উদ্ধার করবে। তাদের বারবার মেসেজ দিচ্ছি। কিন্তু এখনও কেউ সাড়া দেয়নি।