প্রকাশিত:
৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

সংস্থাটির প্রধান ফিলিপ লাজারিনি জানান, সোমবার ভোরে ইসরায়েলি পুলিশ পৌরসভার কর্মকর্তাদের নিয়ে জোর করে কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে।
ইসরায়েল বলছে, সংস্থাটি বকেয়া কর পরিশোধ না করায় এই অভিযান চালানো হয়েছে।
তবে ইউএনআরডব্লিউএ বলছে, সংস্থাটি বেশ কিছুদিন ধরে ভবনটি ব্যবহার করছে না—কারণ এর আগেই ইসরায়েল কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছিল। সংস্থাটি পুরো ঘটনায় আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ঘটনাটির তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ভবনটি এখনো জাতিসংঘের সম্পত্তি এবং সেখানে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করা যায় না। তিনি ইসরায়েলকে দপ্তরের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান।
জেরুজালেম পৌরসভা বলছে, ইউএনআরডব্লিউএর ১ কোটি ১০ লাখ শেকেল বকেয়া কর রয়েছে এবং বহুবার সতর্ক করার পরও তারা কর দেয়নি। তাই কর বিভাগ ভবনে প্রবেশ করে।
তবে সংস্থার মুখপাত্র জোনাথন ফাউলার বলেন, ভবনটি জাতিসংঘের আনুষ্ঠানিক কমপাউন্ড, তাই কোনো কর বকেয়া থাকার প্রশ্নই ওঠে না। তিনি মনে করিয়ে দেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী জাতিসংঘের সম্পত্তি সুরক্ষিত।
ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে ইউএনআরডব্লিউএ–এর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলে। সরকারি মুখপাত্র শশ বেদ্রোসিয়ান আবারো দাবি করেন, ইউএনআরডব্লিউএ গাজায় হামাসের সঙ্গে যুক্ত। এমনকি ৭ অক্টোবর হামলায় অংশ নেওয়া হামলাকারীদের অনেকেই নাকি ইউএনআরডব্লিউএ স্কুলের ছাত্র ছিল।
ইউএনআরডব্লিউএ কয়েকজন কর্মীকে বরখাস্ত করলেও বলেছে,ইসরায়েল সব অভিযোগের প্রমাণ দেয়নি। ২০২৪ সালে ইসরায়েলের পার্লামেন্ট একটি আইন পাস করে, যাতে সংস্থাটির কার্যক্রম দেশে নিষিদ্ধ করা হয়।
ইউএনআরডব্লিউএর ফিলিস্তিনবিষয়ক দূত ফাউলার বলেন, সংস্থাটির বিরুদ্ধে ইসরায়েল বহুদিন ধরে ‘অবিরাম বিভ্রান্তিমূলক প্রচার’ চালাচ্ছে। ইসরায়েল চায়, ইউএনআরডব্লিউএর দায়িত্ব অন্য জাতিসংঘ সংস্থাগুলো নিক। ফিলিস্তিনিদের কাছে ইউএনআরডব্লিউএর অস্তিত্ব তাদের শরণার্থী অধিকার ও ঘরে ফেরার আশার প্রতীক। ১৯৪৮ সালে নিজেদের বাড়িঘর হারানো লাখ লাখ মানুষের কাছে এ সংস্থাটি একমাত্র ভরসা।
১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ইউএনআরডব্লিউএর ম্যান্ডেট জাতিসংঘ গত সপ্তাহে আরো তিন বছরের জন্য নবায়ন করেছে। সংস্থাটি শুধু জেরুজালেম নয়—গাজা, পশ্চিম তীরসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন এলাকায় শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও আশ্রয়সহ গুরুত্বপূর্ণ সেবা দিয়ে থাকে, যার ওপর নির্ভর করে লক্ষ লক্ষ ফিলিস্তিনি শরণার্থী।
সংস্থার প্রধান লাজারিনি জানান, অভিযানের সময় ইসরায়েলি বাহিনী যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় এবং দপ্তরের সরঞ্জামগুলো নিয়ে যায়। তিনি সতর্ক করেন, এই ধরনের পদক্ষেপ পৃথিবীর যেকোনো জায়গায় জাতিসংঘের উপস্থিতির জন্য বিপজ্জনক নজির তৈরি করতে পারে।