প্রকাশিত:
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫

বিএনপি আয়োজিত ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে আজ বৃহস্পতিবার সকালে ফার্মগেটের কেআইবি মিলনায়তনে তিনি এসব কথা বলেন। বিভাগীয় সাংগঠনিক ইউনিটগুলোর হাজারের বেশি নেতা এতে অংশ নেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির পথে নানা বাধা-বিপত্তি আসবে এবং চলছে প্রচারণা–বিরোধী নানা কর্মকাণ্ড। তবে এসব মোকাবিলা করেই দাঁড়াতে হবে মাথা উঁচু করে। তাঁর ভাষ্য—বিএনপি কখনও পরাজিত হয়নি, হবে না; কারণ দলটি জনগণের দল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবাহী দল। দলের সাফল্য নির্ভর করবে অটুট ঐক্য ও জাতীয়তাবাদী আদর্শের ওপর।
তিনি জানান, আজই নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হবে। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন নেতৃত্ব গঠনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, প্রতিনিধিত্বশীল সংসদ গড়ার পথ খুলেছে—যা বাংলাদেশকে নতুন দিগন্তে নিয়ে যাবে। আর এই নেতৃত্বে থাকবেন তারেক রহমান।
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যারা দেশকে পিছিয়ে দিতে চায় সেই শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তিকে জয়ী করার দায়িত্ব বিএনপির সকলের। বিজয় পেতে হলে জনগণের মন জয় করতে হবে, তাঁদের ভালোবাসা অর্জন করতে হবে—যাতে তাঁরা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ধানের শীষে ভোট দেন।
মনোনয়ন পাওয়ার বিষয় নিয়ে এখনই ভাবনার প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি। তাঁর মতে, বিএনপি জনগণকে কী দেবে, সেটাই প্রধান বিষয়। তিনি আরও বলেন, কেউ কেউ অভিযোগ করেন বিএনপি সংস্কার করে না; তবে বিএনপিই সংস্কারের সূচনা করেছিল। উদাহরণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন—জিয়াউর রহমানের বহুদলীয় গণতন্ত্র, পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়ে মুক্ত গণমাধ্যম, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং খালেদা জিয়ার আমলে নারীদের শিক্ষা, যুবসমাজের কর্মসংস্থান ও অর্থনীতির আধুনিকায়ন।
মহাসচিবের ভাষ্য—গত সাড়ে ১৫ বছরের আন্দোলনের শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে বিএনপি। এখন লক্ষ্য, সরকার গঠন করা এবং দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। তারেক রহমান ইতোমধ্যে বেশ কিছু পরিকল্পনা তৈরি করেছেন, যা জনগণের কাছে তুলে ধরতে পারলে তাঁরা নিঃসন্দেহে বিএনপিকে নির্বাচিত করবেন।
তিনি সতর্ক করে বলেন, পিছন থেকে নতুন এক অন্ধকার শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে কি না—তা খেয়াল রাখতে হবে। ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার প্রবণতা আছে কি না—সেটিও পর্যবেক্ষণের দাবি রাখে। বিএনপির নতুন সংগ্রাম দেশকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে দৃঢ় অবস্থানে নেওয়া এবং অপশক্তিকে প্রতিহত করার লড়াই।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সঞ্চালনায় ছিলেন যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল। উপস্থিত ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খানসহ আরও অনেকে।
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, ফ্যামিলি কার্ড, কৃষক কার্ড, কর্মসংস্থানসহ আটটি বিষয়ে কীভাবে কাজ করবে—এ নিয়ে ধারাবাহিক কর্মশালা চলছে। আগামী ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন (শুক্রবার ছাড়া) যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ওলামা দলসহ সহযোগী সংগঠনগুলো এতে অংশ নেবে। এরপর বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসের বাইরে কোনও দিনে হবে সমাপনী অনুষ্ঠান।