ইনকিলাব
প্রকাশ:৩ জুন, ২০২৫
ফাইল ছবি | ইনকিলাব
আর অনেকেই ভ্রমণের আগে নানান ব্যস্ততা আর উত্তেজনায় কিছু না কিছু নিতে ভুলে যান।
তাই ভ্রমণে রওনা হওয়ার আগে ব্যাগ গুছানোর সময় একটু বাড়তি সতর্কতা জরুরি। কিছু জিনিস আছে যা সঙ্গে নিতে কোনোভাবেই ভোলা যাবে না।
অ্যাডাপ্টার
যারা আন্তর্জাতিক ভ্রমণ করেন, তাদের জন্য অ্যাডাপ্টার একটি অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ। বিভিন্ন দেশে বৈদ্যুতিক সকেট বা প্লাগের ধরন আলাদা হওয়াতে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ বা অন্যান্য বৈদ্যুতিক যন্ত্র চার্জ দেওয়ার জন্য একটি আন্তর্জাতিক অ্যাডাপ্টার সঙ্গে রাখা ভীষণ জরুরি।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘সৌক্রা’ নামক বাসা-বাড়ি ভিত্তিক জিনিসপত্র বিক্রির প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও বিশেষজ্ঞ পলিন ইভেইয়ার্ড বলেন, “অনেক সময় হোটেলে চার্জারই পয়েন্টে লাগানো যায় না। তখন যদি অ্যাডাপ্টার না থাকে, পুরো যাত্রাটাই ঝামেলায় পড়ে যায়।”
রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি পরামর্শ দেন, ভ্রমণের সময় অ্যাডাপ্টারটি আগে থেকে চেকলিস্টে রেখে দেওয়া উচিত। বর্তমান বাজারে এমন অনেক মাল্টি-ফাংশনাল অ্যাডাপ্টার পাওয়া যায়, যেগুলো একাধিক দেশের প্লাগের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং ইউএসবি পোর্টসহ আসে।
মোবাইল ফোন চার্জার ও পাওয়ার ব্যাংক
মোবাইল ফোন ছাড়া আজকাল কোথাও যাওয়া যায় না। তবে ভ্রমণে অনেকেই ভুলে যান চার্জার রাখতে।
এ ক্ষেত্রে পলিন বলেন, “অনেকেই কম্পিউটারের মাধ্যমে ফোন চার্জ করেন না, তাই আলাদা ফোন চার্জার সঙ্গে নিতে হবে। ভুলে সঙ্গে না নিয়ে গেলে বিমানবন্দর বা ভ্রমণের গন্তব্যে অনেক বেশি দামে কিনতে হয়।”
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘কো-পাইলটস ফর কো-পেরেন্টস’ নামের ভ্রমণ প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞ নিকোল কানিংহ্যাম একই প্রতিবেদনে, অতিরিক্ত একটি চার্জড পাওয়ার ব্যাংক সঙ্গে রাখার জন্য- পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, “ভ্রমণের দিনগুলো অনেক লম্বা হয়। তাই যে কোনো পরিস্থিতিতে ফোন বা বৈদ্যুতিক যন্ত্র চার্জ দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকা জরুরি।”
নগদ টাকা
যদিও আমরা ডিজিটাল লেনদেনের যুগে বাস করছি, তবুও সামান্য কিছু নগদ অর্থ অনেক সময় জীবন বাঁচায়।
পলিন বলেন, “যে দেশে যাচ্ছেন সে দেশের কিছু অর্থ রাখা উচিত। যদিও ফোনে বিল দেওয়া যায় তবুও আমি হাতে থাকা কয়েন বা অর্থ প্রয়োজনে ব্যবহার করা উচিত।”
টুথব্রাশ
ভ্রমণের ব্যাগে সবচেয়ে বেশি ভুলে যাওয়া একটি জিনিস হল টুথব্রাশ। যেহেতু এটি দৈনন্দিন জীবনের অংশ, তাই ব্রাশটি নিতে ভুলে যাওয়াটা অস্বাভাবিক নয়।
ভ্রমণ বিষয়ক মার্কিন লেখিকা জোনি সুইট বলেন, “বিশেষ করে ইলেকট্রিক টুথব্রাশটা চার্জে দিয়ে রেখে অনেকেই ভুলে যান ব্যাগে নিতে। পরে হোটেলের ডিসপোজেবল ব্রাশ ব্যবহার করতে হয়, যেটা খুবই অস্বস্তিকর।”
সানস্ক্রিন
সানস্ক্রিন ছাড়া ছুটির ভ্রমণে বের হওয়া মানে ত্বকের প্রতি অবিচার। সূর্যের নিচে ঘোরাঘুরিতে ‘স্কিন বার্ন’ বা তাপে ত্বক পুড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। অথচ অনেকে ভুলে যান সানস্ক্রিন ব্যাগে রাখতে।
ভ্রমণের গন্তব্যে গিয়ে সানস্ক্রিন কিনতে হলে অনেক বেশি দাম গুনতে হতে পারে। বিশেষ করে জনপ্রিয় সৈকত এলাকায়। তাই আগে থেকেই ব্যাগে রাখাই ভালো।
আবহাওয়া উপযোগী পোশাক
একটি ভ্রমণ পরিকল্পনার সময় সবচেয়ে বেশি ভুল হয় আবহাওয়া ঠিক মতো বুঝে পোশাক না গোছানো।
এই ধরনের ভুল এড়াতে অন্তত এক সপ্তাহ আগে গন্তব্যের আবহাওয়া পূর্বাভাস দেখে পোশাক গুছিয়ে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ। একটি ভ্রমণ ছাতা কিংবা হালকা জ্যাকেটও সঙ্গে রাখা উচিত।
কলম
হয়ত ভাবছেন কলমের কী প্রয়োজন? তবে আন্তর্জাতিক ভ্রমণে নানান ধরনের ফর্ম পূরণ করতে কলমের দরকার হয়।
ভ্রমণ বিশেষজ্ঞ নিকোল কানিংহ্যাম বলেন, “সবচেয়ে সাধারণ যে জিনিস মানুষ ভুলে যায় তা হল কলম। কাস্টমস ফর্ম পূরণে অন্য কারও ব্যবহৃত কলম ব্যবহার করতে হতে পারে, যেটা স্বাস্থ্য ঝুঁকিরও কারণ হতে পারে। তাই ব্যাগে একটি কলম রাখা খুব জরুরি।”
অতিরিক্ত প্লাস্টিক ব্যাগ
অনেকেই প্রসাধনী রাখতে প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহার করেন। তবে বিভিন্ন আকারের অতিরিক্ত কয়েকটি ব্যাগ রাখলে উপকার পাওয়া যায়।
নিকোল বলেন, “ছোট ছোট জিনিস গোছাতে কিংবা ভেজা জামা, খাবারের প্যাকেট বা ময়লা কাপড় রাখতে এগুলো কাজে আসে।”
ওষুধপত্র
প্রেসক্রিপশনের ওষুধ সাধারণত কেউ ভুলে না। তবে মাথাব্যথা, ঠাণ্ডা-কাশি, গ্যাস বা অ্যালার্জির ওষুধ প্রায়ই বাদ পড়ে যায়।
বিদেশে এই ধরনের ওষুধ খুঁজে পেতে সময় লাগে বা দাম বেশি পড়ে।
তাই কিছু ওষুধ ব্যাগে রাখা যেতে পারে। যেমন- ব্যথানাশক, অ্যালার্জির ওষুধ, গা-গোলানো বা ‘মোশন সিকনেস’য়ের ওষুধ, ঠাণ্ডা কাশির ওষুধ, অ্যান্টিসেপ্টিক ক্রিম ও ব্যান্ডেজ, ডায়রিয়ার ওষুধ, গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ।
এই ওষুধগুলো মূল প্যাকেটেই সঙ্গে রাখা ভালো, যাতে বিমানবন্দরে নিরাপত্তা চেকের সময় অসুবিধা না হয়।